মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: জ্বলে উঠেছে ছাত্ররা, কাঁপছে সচিবালয়——ছাত্ররা বলছে, আর নয়
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৫, ১৭:০৯

আজকের ঢাকা—শুধু শহর নয়, যেন ক্ষোভে উত্তাল এক মঞ্চ। একদিকে স্কুল প্রাঙ্গণে পুলিশের লাঠিচার্জ, অন্যদিকে সচিবালয়ের ফটকে শিক্ষার্থীদের বজ্রকণ্ঠ। বিস্ফোরণ ঘটেছে আক্ষরিক অর্থেই—বিমান বিধ্বস্তের ধাক্কায় কেঁপে উঠেছে গোটা শিক্ষা প্রশাসন।
সোমবার দুপুর, উত্তরা দিয়াবাড়ি –মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। মুহূর্তে আগুন, আতঙ্ক, প্রাণহানি। তবে সবচেয়ে বড় ক্ষত তৈরি হয় পরদিন সকালে—যখন শিক্ষার্থীরা পথে বেরিয়ে শুনতে পান, তাদের এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে—গভীর রাতে নেওয়া সিদ্ধান্তে।
আজ দুপুর সোয়া দুইটা, মাইলস্টোন স্কুল প্রাঙ্গণ—শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি। বিবিসি বাংলা’র লাইভ রিপোর্টে জানা গেছে, অন্তত তিনজনের মাথা ফেটে গেছে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
সরকারের উপদেষ্টারা অবরুদ্ধ! মাইলস্টোন কলেজেই এখন অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, শিক্ষা ও আইন উপদেষ্টা এবং পুরো প্রেস উইং—দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজধানীর সচিবালয়—মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে যোগ দেন। স্লোগান গর্জে ওঠে: আমার ভাই মরল কেন? প্রশাসন জবাব দে! ভুয়া, ভুয়া!
শিক্ষার্থীদের দাবি পরিষ্কার—শুধু বিমান দুর্ঘটনার রাতে পরীক্ষার দায়িত্বহীন স্থগিতাদেশ নয়, এসএসসি পরীক্ষার ফলেও রয়েছে অসংখ্য ভুল ও অবিচার। তাদের দাবি—শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ।
সচিবালয়ের সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা এক পর্যায়ে গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। ভেতরে আটকা পড়ে অনেক সরকারি যানবাহন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নেন কড়া অবস্থান।
এই শুধু ছাত্রদের বিক্ষোভ নয়, এটা একটি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাগ, ক্ষোভ ও প্রতিরোধ। একজন শিক্ষিকার আত্মাহুতি, একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা, আর হাজারো ছাত্র-ছাত্রীর ভাঙা হৃদয়ের গল্প— সব মিলে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষা ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।