পর্দার বাইরের ভুবনে মৌসুমীর নতুন যাত্রা
ওলিউল্লাহ তুহিন | প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:০০

অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদের নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে পর্দার বাইরের ভুবনে। সম্প্রতি কক্সবাজারে কাটানো কয়েকটি দিন তাঁকে এনে দিয়েছে নতুন এক অভিজ্ঞতা—ট্রাভেল ভ্লগিং। ৩২ পর্বের একটি ভ্লগিং শোর অংশ হিসেবে কক্সবাজারে শুটিংয়ে অংশ নেন তিনি, যেখানে ৮টি পর্বে উপস্থাপকের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। শো-এর নাম ‘এমন কক্সবাজার আগে দেখেছেন কি?’ এটি তাঁর প্রথম ট্রাভেল ভ্লগিং অভিজ্ঞতা।
মৌসুমী বলেন, “বাইরে শুটিং মানেই আমার কাছে পিকনিক! এবার তো নন-ফিকশন ভ্লগিং– আরও মজা। নতুন নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছি।”
ভ্রমণবিষয়ক কনটেন্টের প্রতি তাঁর টান নতুন নয়। বছর দুয়েক আগে জনপ্রিয় ভ্লগার নাদির অন দ্য গো-এর একটি ভিডিও তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর ভাষায়, “নাদিরের কনটেন্টে জায়গা নতুন লাগে আর তথ্য থাকে হাতেগোনা ভ্রমণকারীদের অভিজ্ঞতার মতো। কোথাও যাওয়ার আগে তাঁর ভ্লগ দেখে গেলে গাইডলাইন মিলে যায়।”
ভিন্নধর্মী লোকেশন বাছাইয়ে আগ্রহী এই অভিনেত্রী ভবিষ্যতে ট্রেকিং, অপরিচিত প্রাকৃতিক স্থান ও কম দেখা অঞ্চল নিয়ে কাজ করতে চান। বলেন, “শুধু জনপ্রিয় স্পট নয়, অদেখা জায়গাতেও সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে।”
এছাড়াও, বর্তমানে তিনি পডকাস্ট নিয়ে ভাবছেন। বিদেশি কিছু পডকাস্ট দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন ধারার ইন্টারভিউভিত্তিক কনটেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করছেন মৌসুমী। তাঁর মতে, “আমাদের দেশে ইন্টারভিউ মানেই অল্প পরিসর। অথচ পডকাস্টে মানুষ নিজের কথাও বলে, অভ্যাসও বলে, মানসিক যাত্রাও উঠে আসে।”
২০১০ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আলোচনায় আসেন মৌসুমী হামিদ। এরপর নাটক, সিনেমা ও উপস্থাপনায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পাশাপাশি ক্যামেরার পেছনের দিকেও তৈরি হয়েছে আগ্রহ। ভবিষ্যতে পরিচালনায় নামার পরিকল্পনা করছেন তিনি, শুরুটা করতে চান নন-ফিকশন কনটেন্ট দিয়ে।
অভিনয়জীবনেও তাঁর পদচারণা উল্লেখযোগ্য। _‘জালালের গল্প’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী ২’, ‘১৯৭১: সেই সব দিন’, ‘নয়া মানুষ’_সহ একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নয়া মানুষ’ ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।
প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে মৌসুমী অভিনীত নতুন সিনেমা ‘যাপিত জীবন’, যা নির্মিত হয়েছে সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব, চিত্রনাট্য লিখেছেন অনিমেষ আইচ ও ইমতিয়াজ হৃদয়। এই সিনেমায় প্রথমবারের মতো আফজাল হোসেন-এর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি, যা তাঁর কাছে দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ।
মৌসুমী বলেন, “আফজাল ভাই শুধু দক্ষ অভিনেতাই নন, তাঁর ব্যক্তিত্ব আর ব্যবহার থেকেও শেখার মতো অনেক কিছু আছে। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পারাটা সৌভাগ্যের।”
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ‘বিশ্বাস বনাম সরকার’ নামের একটি ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন তিনি, পরিচালনায় ছিলেন সকাল আহমেদ।
অভিনয় ও উপস্থাপনার পাশাপাশি প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করছেন মৌসুমী হামিদ। ঢাকার নিকেতনে সহকর্মী বন্ধুদের সঙ্গে মিলে গড়ে তুলেছেন একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
১৫ বছরের পেশাগত যাত্রায় একের পর এক নতুন পরিচয়ে হাজির হচ্ছেন মৌসুমী হামিদ—অভিনেত্রী থেকে ভ্রমণপ্রেমী, উদ্যোক্তা থেকে পডকাস্ট হোস্ট ও ভবিষ্যতের নির্মাতা। তাঁর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে, মৌসুমী এখনই থেমে যাওয়ার মানুষ নন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।