অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের জন্মদিনে আফজাল হোসেনের ভালোবাসা ও স্মৃতিচারণ

দেশের কিংবদন্তি অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের জন্মদিন আজ। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের এই গুণী শিল্পীর জন্মদিনে সহকর্মী, অনুরাগী ও সংস্কৃতিমনা মানুষজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাচ্ছেন ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।

এই দিনে নূরকে নিয়ে দীর্ঘ আবেগঘন এক পোস্ট দিয়েছেন অভিনেতা, চিত্রশিল্পী ও বিজ্ঞাপন নির্মাতা আফজাল হোসেন। তিনি লিখেছেন,

“কীভাবে এত স্বাভাবিক থেকেও কেউ দুর্দান্ত অভিনয় করতে পারেন! নূরের কণ্ঠ ও উচ্চারণে এমন মাধুর্য আছে, যা সুবাসের মতো নীরবে অনুভবকে আলিঙ্গন করে।”

নিজের পেশাজীবনের শুরুতে নূরের কাছ থেকে পাওয়া সহযোগিতার স্মৃতি টেনে আফজাল জানান, যখন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো দেশীয় নির্মাতাদের ওপর ভরসা করত না, তখনই আসাদুজ্জামান নূর তাঁকে একটি আন্তর্জাতিক পণ্যের বিজ্ঞাপন তৈরির দায়িত্ব দেন। তখন নূর বলেছিলেন—“সম্মান যেন থাকে।”

আফজাল লেখেন,

“নূর ভাই দেশের বড় প্রতিষ্ঠানের কর্তা ছিলেন, আমি তখনও নিজের জায়গা তৈরি করছি। কিন্তু ভালো কাজের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, তা আজও মনে আছে।”

নাট্যমঞ্চে আসাদুজ্জামান নূর ছিলেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের মুখ্য অভিনেতা, আর আফজাল হোসেন ছিলেন ঢাকা থিয়েটার-এর সদস্য। ভিন্ন দল হলেও তাঁরা একে অপরের শিল্পচর্চার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করতেন।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আফজাল লেখেন,

“নূর ভাই বেঁচে আছেন—সে বেঁচে থাকা মৃত্যুর চেয়ে ভালো। আশা করছি, নূর ভাই ফিরবেন, আরও কাছের হয়ে ওঠার সুযোগ পাব।”

সত্তর ও আশির দশকের নাটক ও মঞ্চে নিজস্ব অভিনয়ভঙ্গিতে দর্শকের হৃদয় জয় করেছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। ‘বাকের ভাই’ চরিত্রের মাধ্যমে তিনি এক প্রজন্মের স্মৃতিতে অমর হয়ে আছেন।

অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। নীলফামারী-২ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর, ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকায় নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন।

নিফ্লা৭১/ওতু