আজ প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের জন্মদিন, স্মৃতিচারণে আবেগঘন কনকচাঁপা
বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৯
বাংলা গানের প্লেব্যাক সম্রাট, স্বর্ণকণ্ঠ এন্ড্রু কিশোর। সংগীতজীবনে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি গানে—যার প্রতিটি আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে অম্লান। আজ, ৪ নভেম্বর, এই কিংবদন্তি শিল্পীর জন্মদিন। শারীরিকভাবে না থাকলেও তিনি আগের চেয়ে যেন আরও বেশি আপন হয়ে রয়েছেন ভক্ত, সহকর্মী ও সংগীতপ্রেমীদের মনে।
এই দিনে সহকর্মী ও সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা সামাজিক মাধ্যমে এন্ড্রু কিশোরকে স্মরণ করে লিখেছেন এক আবেগঘন বার্তা। তিনি পোস্ট করেছেন তাঁদের জনপ্রিয় গান ‘আমার নাকের ই ফুল বলে রে তুমি যে আমার’ রেকর্ডিংয়ের সময় তোলা একটি ছবি।
কনকচাঁপা লিখেছেন—
“এই ছবিটি ‘তোমাকে চাই’ সিনেমার গানের রেকর্ডিংয়ের সময় তোলা। আমাদের ‘এন্ড্রু কিশোর–কনকচাঁপা’ জুটিকে যিনি নিজের ভালোবাসার তুলিতে এঁকেছিলেন, সেই মহাশিল্পী আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাইকেও কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি ও কিশোরদা দুজনেই এখন আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা অবিরাম।”
প্লেব্যাক সম্রাটকে ‘তরল সোনা মাখানো কণ্ঠের রাজা’ বলে আখ্যায়িত করে কনকচাঁপা আরও লেখেন—
“শুভ জন্মদিন, হে সোনার কণ্ঠের রাজা এন্ড্রু কিশোর দাদা! আপনি নেই, অথচ আগের চেয়ে আরও বেশি কাছে। সিনেমা হলে যখন তাঁর গান বাজে, তখন পুরো হল ভরে যায় সেই সুরে। ‘ডাক দিয়াছে দয়াল আমারে’ শুনে চোখ ভিজে যায়, আর ‘তুমি আমার জীবন’ শুনে প্রেম জাগে হৃদয়ে।”
এন্ড্রু কিশোরের সঙ্গে টানা ৩৪ বছর গান করেছেন কনকচাঁপা। তিনি জানান, আজও যখন মঞ্চে গান করেন, তখন কিশোরদার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে—
“তিনি আজ নেই, অথচ তাঁর কণ্ঠের বিস্ময় আজও কাটে না। মঞ্চে গাইলে মনে হয়—এই সম্মান, এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।”
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। সংগীতানুরাগী মা ছিলেন কিংবদন্তি কিশোর কুমারের ভক্ত—প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন ‘কিশোর’। ছোটবেলা থেকেই সংগীতের তালিম নেন তিনি, আর সেই শিক্ষাই তাঁকে নিয়ে যায় এক অনন্য উচ্চতায়।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গান দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করেন। এরপর থেকে একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন—যেগুলোর মাধ্যমে প্রেম, বিরহ, আনন্দ ও বেদনা পেয়েছে নতুন সুরের পরিধি।
দীর্ঘ সংগীতজীবনে অসংখ্য পুরস্কার ও শ্রোতাপ্রেম অর্জন করেন এন্ড্রু কিশোর। ২০২০ সালের ৬ জুলাই দীর্ঘ দশ মাস ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
তবে তাঁর কণ্ঠ, তাঁর গান—আজও বাংলার প্রতিটি প্রজন্মে বয়ে চলেছে অবিনশ্বর এক সোনার স্রোতের মতো।
নিফ্লা৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।