বৃহঃস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

মুক্তি পাচ্ছে আদালতকেন্দ্রিক সামাজিক ড্রামা ‘হক’

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৫৮

সংগৃহীত

‘রাজি’, ‘তলওয়ার’, ‘বধাই দো’-এর মতো সফল চলচ্চিত্র উপহার দেওয়ার পর প্রযোজনা সংস্থা জংলি পিকচারস এবার নিয়ে এসেছে ‘হক’, এক অনন্য আদালতকেন্দ্রিক সামাজিক ড্রামা। সিনেমায় একত্রিত হয়েছে ন্যায়বিচারের অনুসন্ধান, ধর্মীয় অনুশাসন, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নারীর আত্মমর্যাদার লড়াই। ভারতের আলোচিত শাহ বানু মামলা- থেকে অনুপ্রাণিত গল্পটি দর্শকদের সামনে তুলে ধরে মানবিক ও সামাজিক প্রশ্নের গভীরতা।

১৯৮৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়, যা ধর্মনিরপেক্ষ বিচার ও ব্যক্তিগত ধর্মীয় আইনের মধ্যে নতুন সংলাপ সৃষ্টি করেছিল, তার প্রেক্ষাপটে সিনেমার কাহিনি এগোয়। পরিচালক সুপারন এস. বর্মা এই চলচ্চিত্রে সাজিয়া বানু চরিত্রের মাধ্যমে দেখিয়েছেন একজন মুসলিম নারীর লড়াই, যিনি সমাজের নিয়ম, প্রথা ও পিতৃতান্ত্রিক মানদণ্ডের বেড়াজাল ভেঙে নিজের ও সন্তানের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য আদালতে যায়।

সাজিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়ামি গৌতম, যিনি বলিউডে তার শক্তিশালী অভিনয়ের জন্য পরিচিত। সাজিয়ার স্বামী, আইনজীবী আব্বাস চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমরান হাশমি, যিনি এখানে এক ভিন্ন অবতারে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন। এই প্রথমবার ইয়ামি ও ইমরানকে একসঙ্গে দেখা যাবে বড়পর্দায়, যা বলিউডে নতুন জুটির সূচনা হিসেবে আলোচিত।

ট্রেলারে দেখা যায়, সাজিয়া ও আব্বাসের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সাজিয়া যখন আদালতের দ্বারস্থ হন, তখন ব্যক্তিগত ক্ষোভ, সামাজিক চাপ ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা মিলেমিশে জটিল সংঘাত তৈরি করে। ট্রেলারের সংলাপ, ‘যখন একজন নারী তাঁর অধিকারের জন্য লড়াই শুরু করেন, তখন তাঁর কণ্ঠ একা থাকে না, তা সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রতিধ্বনিত হয়’, মূল বার্তা হিসেবে দর্শকের হৃদয়ে গভীর ছাপ রাখে।

ইয়ামি গৌতম বলেন, “সাজিয়ার গল্প আমাকে একজন নারী ও অভিনেত্রী হিসেবে বদলে দিয়েছে। এটি প্রতিটি নিস্তব্ধ কণ্ঠের প্রতীক, যারা কখনও উচ্চারণের সাহস পায়নি।” ইমরান হাশমি যোগ করেন, “আদালতের দৃশ্যগুলো কেবল যুক্তি ও প্রমাণের লড়াই নয়; এটি ভালোবাসা, পরিচয়, বিশ্বাস ও সমাজের ভেতরের দ্বন্দ্বের প্রতিফলন।”

ছবিতে ইয়ামি ও ইমরানের পাশাপাশি রয়েছেন ভার্তিকা সিং, যাঁর এটি বলিউডে প্রথম কাজ, এছাড়া অভিনয় করেছেন শিবা চাড্ডা, ড্যানিশ হুসেইন ও অসীম হাতাঙ্গাডি।

সম্প্রতি জংলি পিকচারসের আয়োজিত বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি, প্রবীণ আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা ও করপোরেট ব্যক্তিত্বরা। তারা ছবির সামাজিক বার্তা ও অভিনেতাদের অভিনয়ের প্রশংসা করেন। তবে ছবিটি ঘিরে বিতর্কও হয়েছে। শাহ বানুর পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হয়েছে ছবির মুক্তি স্থগিত করার জন্য। তাদের দাবি, ছবিটি মুসলিম সমাজের ভাবাবেগে আঘাত করতে পারে।

‘হক’ মূলত প্রশ্ন তোলে—‘কওম’ না ‘আইন?’ অর্থাৎ ধর্ম, সামাজিক প্রথা নাকি সংবিধান, কার কর্তৃত্বে বিচার হবে? এটি দর্শকদের শুধুমাত্র বিনোদন দেবে না, চিন্তা, বিতর্ক ও আত্মসমালোচনার সুযোগও প্রদান করবে।

আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে ‘হক’। তখন জানা যাবে সাজিয়া বানুর ন্যায় ও আত্মসম্মানের লড়াই দর্শক ও সমালোচকদের কতটা স্পর্শ করতে সক্ষম। সম্ভবত এটি অনেকের ভেতর ঘুমন্ত কণ্ঠ জাগিয়ে, নিজের ‘হক’-এর জন্য দাঁড়ানোর সাহস যোগাবে।

 

 

নিফ্লা৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top