বৃহঃস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২

৭২ বছর বয়সে সেফ এক্সিট ভাবতে হলে তা হবে দুঃখজনক

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫১

ছবি: সংগৃহীত

সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, “৭২ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়।”

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোস্টটির শিরোনাম ছিল— ‘উপদেষ্টার রোজনামচা, চালকের হেলমেট নাই, ও সেফ এক্সিট’

পোস্টে তিনি লেখেন, গতকাল সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনযোগে ভৈরব যান। তার সঙ্গে ছিলেন যাতায়াত খাত বিশেষজ্ঞ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. মইনুদ্দিনসহ রেল ও সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শনের পর ভৈরবে পৌঁছে আশুগঞ্জ স্টেশন ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় বিএনপি–জামায়াত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি জানান, আশুগঞ্জ স্টেশনের বেহাল অবস্থা দেখে সিগন্যালিংসহ অন্যান্য ত্রুটি নিরসন ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালককে।

এরপর সরাইলের পথে যান তিনি। কিন্তু তীব্র যানজটে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পরে বাধ্য হয়ে হেঁটে ও মোটরসাইকেলে গন্তব্যে রওনা দেন।
সেখানে গিয়ে দেখেন, চালক বা যাত্রী কারোই হেলমেট নেই। বহু খোঁজাখুঁজির পর একটিমাত্র হেলমেট পাওয়া যায়, যা পরে নিজেই তিনি যাত্রা করেন। পরে হেলমেটবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও বিআরটিএকে নির্দেশ দেন।

ফাওজুল কবির লিখেন, সরাইল চৌরাস্তার নির্মাণকাজ যানজটের একটি কারণ হলেও, মূল সমস্যা চালকদের শৃঙ্খলাহীনতা ও হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের দুর্বল ব্যবস্থাপনা।
তিনি বলেন, “মূল রাস্তায় দুই পাশে ডিভাইডার ভেঙে ফেলেছে। ফলে দুই লেনের রাস্তা কখনো তিন, কখনো চার লেনে পরিণত হচ্ছে— সবাই আগে যেতে চায়, কেউই পারছে না।”

এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের আইজিপির সঙ্গে কথা হয়েছে এবং আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গেও কথা বলবেন। পাশাপাশি রাস্তা সংস্কারে ছয়টি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ ১২ কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পদায়ন করা হয়েছে।

ফেরার পথে এক সাংবাদিক ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে মত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন,
“বিষয়টি উত্থাপনকারী এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনা। তার বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করা আমার জন্য শোভন নয়।”

ফাওজুল কবির আরও লেখেন, “উপদেষ্টা হিসেবে যোগদানের পর থেকে পদে থেকে কোনো অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের ব্যবসা কিংবা চাকরি পাইয়ে দিইনি। নিজের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি।”

তিনি জানান, অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাসের নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও তা গ্রহণ করেননি।
পোস্টের শেষাংশে তিনি লিখেন, “তাই, আজ ৭২+ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়।”

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top