যুদ্ধবিরতির পর আলোচনায় ভারত-পাকিস্তান সিন্ধু পানি চুক্তি, সমাধান মিলবে কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৫, ১৭:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি প্রাণঘাতী সংঘাত এখন আলোচনার কেন্দ্রে। কয়েকদিনের উত্তেজনার পর গেল শনিবার বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরে জমে থাকা সংকট তো কাটেনি। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ঠিকই। কিন্তু ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখার বিষয়ে এখনও অনড়। উল্টো চেনাব নদীর পানি ছেড়ে দিয়ে পাকিস্তানকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ভারত।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে জানিয়েছেন, ভারতের স্থগিত করা সিন্ধু নদ পানি চুক্তি, বিরোধপূর্ণ কাশ্মির এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হবে। তবে কবে কখন দুই দেশ এসব বিষয় নিয়ে বসবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তান পরোক্ষভাবে জড়িত এমন অভিযোগ তুলে দেশটির সঙ্গে সিন্ধু নদ চুক্তি বাতিল করে নয়াদিল্লি। একইসঙ্গে পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা সুবিধা বাতিল করে। এবং কূটনীতিক সম্পর্ক অবনতি ঘটে। এরপর পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি স্থগিতসহ ভারতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়।

সিন্ধু নদ পানি চুক্তির মাধ্যমে সিন্ধুর উপনদীর পানিগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগ করে আসছিল ভারত-পাকিস্তান। চুক্তির আওতায় পাকিস্তান পাচ্ছিল সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব নদীর পানি। অপরদিকে ভারত ব্যবহার করছিল শতদ্রু, বিয়াস এবং রবি নদীর পানি। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি হয়েছিল।

গত ৫ মে ভারত চেনাব নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে নিজেদের বাঁধগুলোর পানি বাড়িয়েছিল। এতে করে পাকিস্তানে হঠাৎ করে নদীর পানি কমে যায়। তবে এর পরেরদিনই তারা পানি ছেড়ে দেয় বলে এক প্রতিবেদনে জানায় সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

৭ মে ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান চালানোর পর থেকে প্রতিদিনই সীমান্তে সংঘর্ষ চলছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় ১০ মে সন্ধ্যায়, উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। পাকিস্তান একে চুক্তিভিত্তিক যুদ্ধবিরতি বলে অভিহিত করলেও ভারত বলেছে, সব ধরনের গোলাগুলি ও সামরিক অভিযান বন্ধে সম্মতি হয়েছে।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, পানি চুক্তি স্থগিত থাকা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা পুনরায় বাড়িয়ে তুলতে পারে। যুদ্ধবিরতি স্বস্তি এনেছে, কিন্তু পানিচুক্তির মতো দীর্ঘস্থায়ী সংকটগুলোতে সমাধান না হলে, এই শান্তি বেশিদিন টিকবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top