ত্রিভুজ পরকীয়ার জেরে আশরাফুল হত্যা: ২৬ খণ্ড লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার দুই
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩
রাজধানীতে কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের ২৬ খণ্ড লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলাম এবং পরকীয়া প্রেমিকা শামীমা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং র্যাব-৩ সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে।
ডিবি সূত্র জানায়, শামীমা আক্তার নামে বিবাহিত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আশরাফুল ও মালয়েশিয়া প্রবাসী জরেজুল ইসলাম। দুজনের সম্পর্কই পরিণত হয় ত্রিভুজ প্রেমে, যা তাদের গভীর বন্ধুত্বে ফাটল সৃষ্টি করে। সম্পর্কের জেরেই ঘটে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।
তদন্তে উঠে এসেছে, ছুটিতে দেশে ফিরে শামীমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ান জরেজুল। পরে আশরাফুলের সঙ্গেও একই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জেনে ক্ষিপ্ত হন জরেজুল।
জরেজুল ঢাকায় দক্ষিণ ধনিয়ায় একটি বাসা ভাড়া নেন। শামীমাও কুমিল্লায় সন্তান রেখে সেখানে ওঠেন। একপর্যায়ে শামীমা–আশরাফুল–জরেজুল একসঙ্গে ওই বাসায় অবস্থান করেন।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, জরেজুল বাসা ত্যাগ করার আগ মুহূর্তে ভুলে আশরাফুলের মোবাইল নিয়ে চলে যান। পরে তা ফেরত দিতে ফিরে এসে দেখেন শামীমা ও আশরাফুল ঘুমাচ্ছেন। তখনই তিনি বাসার ভেতরে লুকিয়ে রাতের অপেক্ষায় থাকেন।
রাতে শামীমা ও আশরাফুল আবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে ক্ষুব্ধ জরেজুল আচমকা আশরাফুলের ওপর হামলে পড়েন। প্রথমে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা, এরপর হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান আশরাফুল।
হত্যার পর লাশ দুই দিন বাসার ভেতরে রাখা হয়। পরে শামীমা ও জরেজুল মিলে লাশ ২৬ টুকরো করে দুটি ড্রামে ভরে বৃহস্পতিবার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে ফেলে দেন।
-
জরেজুল ইসলাম—গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা থেকে ডিবি কর্তৃক গ্রেফতার
-
শামীমা আক্তার—একই রাতে লাকসাম, কুমিল্লা থেকে র্যাব-৩ এর হাতে আটক
শামীমার দুই সন্তান রয়েছে, স্বামী সৌদি আরবে থাকেন। তিন বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে তার জরেজুলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ড্রাম থেকে খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের পর সিআইডি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে নিশ্চিত হয় এটি আশরাফুল হকের লাশ। তিনি একটি মামলার বাদী হওয়ায় তার তথ্য ডাটাবেজে ছিল।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন-
“ত্রিভুজ পরকীয়া প্রেমের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। আশরাফুল তার বন্ধু ও তার প্রেমিকার হাতে খুন হয়েছে। জরেজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আইনি প্রক্রিয়া চলমান।”
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।