সিয়েরা লিওনে
কালো জাদু চর্চার ছায়ায় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক হত্যা
ফ্রি টাউন, সিয়েরা লিওন: | প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১২
চার বছর আগে পাপায়ো নামে ১১ বছর বয়সী এক কিশোরকে হত্যা করা হয় কালো জাদুর নামে। তার মা সাল্লাই কালোকা বিবিসিকে বলেন, “আমি কষ্টে আছি। তারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে, আর এখন শুধু নীরবতা।” পাপায়োর দেহ উদ্ধার করা হয় এক পরিত্যক্ত কুয়া থেকে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ ও একটি হাত কেটে নেওয়া ছিল।
সিয়েরা লিওনের বিভিন্ন অঞ্চলে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড এবং কালো জাদুর চর্চার ঘটনা সাধারণ। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ বাণিজ্য জড়িত, যা ধন-সম্পদ ও ক্ষমতা অর্জনের আশ্বাস দিয়ে তান্ত্রিকরা চালান। দেশটির সীমিত চিকিৎসা ও পুলিশ সংস্থার কারণে অপরাধীদের শনাক্ত করা খুবই কঠিন।
বিবিসি আফ্রিকা আই অনুসন্ধানে এমন দুই জনকে খুঁজে পেয়েছে, যারা নিজেদের জুজু অনুশীলনকারী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং হত্যাকৃত ব্যক্তির দেহ থেকে নির্দিষ্ট অংশ সরবরাহ করতে রাজি ছিলেন। তারা দাবি করেছেন, পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রভাবশালী গ্রাহকরা তাদের সঙ্গে যুক্ত। একজন জুজু অনুশীলনকারী কানু জানান, তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও অর্থের জন্য মানুষের অঙ্গ ব্যবহার করেন।
সাধারণ ভেষজ চিকিৎসক ও প্রথাগত চিকিৎসকরা কালো জাদু চর্চাকারীদের কারণে কলঙ্কিত হচ্ছেন। সিয়েরা লিওনের ট্র্যাডিশনাল হিলারস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শেকু তারাওয়ালি বলেন, “মানুষকে পুড়িয়ে, অঙ্গাংশ সংগ্রহ করে শক্তি অর্জন করা হচ্ছে। আমাদের সাধারণ চিকিৎসা কার্যক্রমকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে।”
সম্প্রতি মাকেনি ও ওয়াটারলুতে কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছেন, যেখানে ফাতমাটা কন্তে নামের এক নারী ও তার শিশুসন্তানদের হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয়রা মনে করেন, এটি কালো জাদু চর্চার সঙ্গে সম্পর্কিত। সরকারের সীমিত সম্পদের কারণে ময়নাতদন্ত ও মামলা চলাচল খুব ধীর।
পাপায়োর মতো শিশুরা এবং ফাতমাটার মতো প্রাপ্তবয়স্করা বিচার না পাওয়ার কারণে স্থানীয় দরিদ্র এলাকায় ভয়ের আবহ তৈরি হচ্ছে।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।