জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর ‘ব্যাপক শোষণ’:
নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৯
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর ‘ব্যাপক ও পদ্ধতিগত শোষণ, প্রতারণা এবং ঋণ-দাসত্ব’ চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। দেশটিতে বৈধ ওয়ার্ক পারমিটধারী ৮ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন—যা মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংখ্যা।
জাতিসংঘ জানায়, হাজারো শ্রমিক এখনও বাংলাদেশেই আটকে আছেন অথবা মালয়েশিয়ায় গিয়ে নানাভাবে শোষণের মুখে পড়ছেন। অনেক শ্রমিক সরকার নির্ধারিত ফি–এর পাঁচগুণ পর্যন্ত অর্থ দিয়ে বিদেশে গেছেন, ফলে ঋণের দাসত্বে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বহু শ্রমিক পাসপোর্ট জব্দ, ভুয়া চাকরির প্রতিশ্রুতি, চুক্তিজনিত বৈষম্য এবং সরকারি সহায়তার ঘাটতির মতো সমস্যায় ভুগছেন।
যথাযথ নথি না থাকলে তাঁদের গ্রেপ্তার, আটক, নির্যাতন এবং কঠোর ইমিগ্রেশন আইনের আওতায় জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি থাকে। সাম্প্রতিক অভিযানে প্রায় ১৮ হাজার অভিবাসী, শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীকে আটক করা হয়েছে।
এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খল ও বাণিজ্যেও প্রভাব ফেলছে।
আগে যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগে মালয়েশিয়ার বেশ কিছু কারখানার পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
২০২৭ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ফোর্সড লেবার রেগুলেশন’ কার্যকর হলে জোরপূর্বক শ্রমে তৈরি পণ্যের ওপর কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে—যা ঋণদাসত্ব ও শ্রম প্রতারণাকে ‘নিষিদ্ধ বাণিজ্যের’ ঝুঁকিতে ফেলবে।
জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেন, শ্রমিক প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী দেশগুলো—বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো গন্তব্য দেশসহ—সব পক্ষেরই দায়িত্ব শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করা।
অভিযোগ তদন্ত, প্রতিকার প্রদান এবং প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।
বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের ফেয়ার লেবার অ্যাসোসিয়েশনের ‘রেসপনসিবল রিক্রুটমেন্ট’ নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলেন—যাতে নিয়োগ ব্যয় সরবরাহ শৃঙ্খলে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং শ্রমিকরা যথাযথ আইনগত সহায়তা পান।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।