ফুলন দেবীর দস্যুরানী থেকে ভারতে সংসদ সদস্য হওয়ার কাহিনী
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:৩২
১৯৮০-এর দশকে ভারতের উত্তর প্রদেশে ডাকাতি ও ত্রাসের নাম হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ফুলন দেবী, কেবল স্থানীয় নয়, বরং সমগ্র দেশে দস্যুরানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ছোট বয়সে অত্যাচারের শিকার হওয়া এই নারী ডাকাত, ১৯৮১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বেহমাই গ্রামে ২২ জনকে হত্যা করার ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে ভয় ও কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন।
ফুলন দেবীর জীবনী নিয়ে বেশ কয়েকটি বই ও সিনেমা নির্মিত হয়েছে। সবচেয়ে পরিচিত চলচ্চিত্র হলো ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ব্যান্ডিট কুইন’, যা মূলত মালা সেনের লেখা জীবনী ‘India’s Bandit Queen: The True Story of Phoolan Devi’-এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত।
উত্তর প্রদেশের একটি নিম্নবর্ণের পরিবারে জন্ম নেওয়া ফুলন দেবী ছোটবয়সে পুতিলাল নামে এক ব্যক্তি দ্বারা শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হন। পরে ডাকাত বাবু গুজ্জরের অপহরণের পর তিন দিনের মধ্যে বিক্রম মাল্লার নেতৃত্বে ডাকাত দলে যোগ দেন। পরবর্তীতে বিক্রমের মৃত্যুর পর বেহমাই গ্রামে তাদের কাণ্ড ঘটে, যেখানে দলটি ২২ জন ঠাকুর সম্প্রদায়ের পুরুষকে হত্যা করে। যদিও ফুলন দেবী দাবি করেছিলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না।
ফুলন দেবীকে গ্রেফতার করতে পুলিশের দীর্ঘ চেষ্টার পর ১৯৮৩ সালে মধ্য প্রদেশে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর তিনি দীর্ঘ ১১ বছর জেলে থাকার পর মুক্তি পান। ১৯৯৬ সালে তিনি সমাজবাদী পার্টির টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের ২৫ জুলাই, দিল্লিতে তাঁর বাসভবনের সামনে শের সিং রানা নামের যুবকের গুলিতে নিহত হন। তার গুলিতে ফুলন দেবীর দেহরক্ষীরাও আহত হন। হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন, তবে পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান।
ফুলন দেবীর জীবন শুধু ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডের গল্প নয়; এটি সামাজিক নিপীড়ন, প্রতিশোধ এবং রাজনৈতিক জীবনের এক দৃষ্টান্তও।
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।