ট্রাইব্যুনালে আনা হলো হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১০

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই–জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই–আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের আজ বুধবার (২১ অক্টোবর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে।

 

সকাল সোয়া ৭টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এরপর সাড়ে ৭টার দিকে পুলিশ সদস্যরা তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নিয়ে যান।

 

হাজির সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, মেজর জেনারেল মোস্তফা সরোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, কর্নেল মশিউল রহমান জুয়েল, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবির আহম্মেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী ও লে. কর্নেল মখচুরুল হক (অব.)। তবে আরও কয়েকজনের নাম এখনো জানা যায়নি।

 

আজই ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের দিন ধার্য ছিল। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ওপর শুনানিও অনুষ্ঠিত হবে ট্রাইব্যুনাল–১ এ। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

 

এদিকে সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির ঘিরে রাজধানীর কাকরাইল, পল্টন, মৎস্য ভবনসহ আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্ট এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে।

 

গতকাল মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, ট্রাইব্যুনাল হাজিরের দিন ধার্য ছিল আজ। হাজির না হলে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। হাজির হলে ট্রাইব্যুনালের আদেশ অনুযায়ী কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।

 

প্রসিকিউশনের সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী ঘরানার ব্যক্তিদের গুম করে টিএফআই সেলে বন্দি রেখে নির্যাতনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয় ৮ অক্টোবর। একইদিন ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত জেআইসি সেলে গুমের আরেক মামলায় হাসিনা ও তারেক রহমানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এছাড়া জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আরও চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন।

 

সব মিলিয়ে তিন মামলায় মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা অভিযুক্ত। সেনা সদর জানায়, ৯ অক্টোবর ১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

 

অভিযোগ আমলে নেওয়ার শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন এবং আজকের মধ্যে হাজিরের নির্দেশ দেন।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top