ঢামেকের সামনে ফেলে যাওয়া তরুণীর পরিচয় মিলল, পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ পরিবারের
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২২
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগের সামনে একটি ট্রলিতে ফেলে রাখা অজ্ঞাত তরুণীর পরিচয় অবশেষে শনাক্ত হয়েছে। নিহত ওই তরুণীর নাম রাশেদা আক্তার (২২)। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার পুখুরিয়া গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে গিয়ে রাশেদার বড় বোন খালেদা আক্তার ও ভগ্নিপতি মামুন মরদেহটি শনাক্ত করেন।
এর আগে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি নিজেকে ‘স্বামী’ পরিচয় দিয়ে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে একটি ট্রলিতে মরদেহটি রেখে কৌশলে পালিয়ে যান। পরে অজ্ঞাতপরিচয়ে থাকা ওই তরুণীর লাশ শনাক্ত করেন স্বজনেরা। পরিবারের অভিযোগ, রাশেদাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের বোন খালেদা আক্তার জানান, রাশেদা সম্প্রতি মাগুরার আলোকদিয়া অমরেশ বসু ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিতে মাত্র ১৬ দিন আগে তিনি ঢাকায় এসে মিরপুরে খালেদার বাসায় ওঠেন। পড়াশোনার পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য মিরপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজও শুরু করেছিলেন তিনি।
নিহতের ভগ্নিপতি মামুন জানান, মঙ্গলবার সকালে মাগুরা থেকে ফোনে তারা জানতে পারেন—এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে যে নয়ন ইসলাম নামের এক যুবক রাশেদাকে হত্যা করেছে এবং ঘটনার পর থেকে তার পরিবার পলাতক রয়েছে। এ খবর পেয়ে তারা ঢামেক হাসপাতালের মর্গে ছুটে আসেন।
খালেদা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের প্রতিবেশী মতিউর রহমানের ছেলে নয়ন ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে রাশেদাকে উত্যক্ত করত।
‘তার কারণে আমার বোন ঠিকমতো পড়াশোনাও করতে পারত না। সেই নয়নই আমার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঢামেক হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়েছে,’—বলেন তিনি। পরিবার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, গত শনিবার রাশেদা কর্মস্থলে যাননি। ওই দিন রাত ৮টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরে জানা যায়, ওই রাতে নয়ন ইসলাম মিরপুরে রাশেদার বাসার সামনে এসে তার সঙ্গে দেখা করেন। একটি দোকানের সামনে তাদের মধ্যে তীব্র ঝগড়াও হয়। এরপর থেকেই রাশেদা নিখোঁজ ছিলেন এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আজম বলেন,
‘নিহতের স্বজনেরা মঙ্গলবার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত নয়ন ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
এনএফ৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।