• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


ইহুদিদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআন কী বলে?

ইহুদিদের সম্পর্কে মহানবী (সা.) কী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৫৭

ছবি: সংগৃহীত

যুগে যুগে ইহুদিরা লাঞ্ছিত হয়েছেন নানা কারণে। আজও তাদের চরিত্রে কোনও পরিবর্তন আসেনি। বিশ্বাসঘাতকতা ও নিষ্ঠুরতা তাদের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইহুদিরা বিভিন্ন দেশ থেকে বারবার বিতাড়িত হয়েছেন। ইহুদিরা মুসলমানদের প্রাণ আল আকসা দখল করেছে। আশ্রিত ইহুদিরা ফিলিস্তিনিদের দেশ জবর দখল করেছে। মানবতা ও শান্তির ঠিকাদার পশ্চিমাবিশ্ব দখলদার ইসরাইলকে নগ্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ইসরাইল এখনও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে যাচ্ছে। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইহুদিদের সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন। মহানবী (সা.) তাদের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আজকের আলোচনায় তাদের চরিত্র ও পরিণতি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হলো।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আরো স্মরণ করো, যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, তিনি কেয়ামত পর্যন্ত সবসময় বনি ইসরাইলের ওপর এমন লোককে প্রভাবশালী করবেন যারা তাদের নিকৃষ্টতম শাস্তি দান ও নির্যাতন করতে থাকবে। (সূরা আরাফ  ১৬৭)।

ইরশাদ হয়েছে, তাদের ওপর অপমান ও অভাব লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গজবের শিকার হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর আয়াতের সঙ্গে কুফরী করেছে এবং নবীদের হত্যা করেছে, এটা ছিল তাদের নাফরমানি এবং তারা ছিল সীমালঙ্ঘকারী। (সূরা বাকারা  ৬১)।

তারা যেহেতু নিজেদের শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর নির্বাচিত উত্তম মানুষ বলে মানে, সেহেতু অন্য ধর্ম ও আদর্শের প্রতি তাদের অসহনশীলতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সে পর্যন্ত আপনার ওপর সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্ম ও মিল্লাতের অনুসরণ করেন। (সূরা বাকারা : ১২০)।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর আয়াতের সঙ্গে কুফরী করে, নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারীদেরও হত্যা করে, তাদের কষ্টদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। তারাই ওই সকল যাদের আমল দুনিয়া এবং আখেরাতে ব্যর্থ বেকার এবং যাদের কোনো সাহায্যকারী নেই। (সূরা আল ইমরান  ২১-২২)। 

ইহুদিরা পৃথিবীর দেশে দেশে অশান্তি ও গোলযোগ সৃষ্টি করে। মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে ঢুকে কুমন্ত্রণা দিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যায় নিক্ষেপ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায়, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা যমীনে ফিতনা ফাসাদ ও গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৪)। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ইহুদিরা বলে, আল্লাহর হাত বন্ধ। আসলে তাদের হাতই বন্ধ; তাদের এই বক্তব্যের জন্য তাদের ওপর অভিশাপ। বরং আল্লাহর হাত প্রসারিত ও উন্মুক্ত। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন। (সূরা মায়েদা : ৬৪)।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, বনি ইসরাইলের যারা কুফরী করেছিল, তাদের ওপর লানত বর্ষিত হয়েছিল দাউদ এবং ইসা ইবনে মরিয়মের জবানে। এর কারণ তারা ছিলো নাফরমান ও সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা মায়েদা : ৭৮)। আল্লাহ ইহুদিদের ব্যাপারে আরও বলেন, তারা মন্দ কাজ থেকে বিরত হয় না, যা তারা ইতঃপূর্বে করেছে এবং তারা যা করে তা কতই না খারাপ। (সূরা মায়েদা  ৭৯)। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে নবী, আপনি ইহুদি ও মুশরেকদেরকে মুসলমানদের কঠোর শত্রু হিসাবে দেখতে পাবেন। (সূরা মায়েদা : ৮২)।

ইহুদিরা ভীরু ও কাপুরুষ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা সবাই মিলেও তোমাদের সাথে লড়াই করবে না। হ্যাঁ, সুরক্ষিত জনপদ কিংবা দুর্গের দেয়ালের আড় থেকেই লড়াই করার সাহস করবে। (সূরা হাশর: ১৪)। ইহুদিরা যে কোনো চুক্তি ও সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করতে কুণ্ঠা বোধ করে না। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তাদের চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী এবং অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করার কারণে আল্লাহ তাদের অন্তরে গোমরাহির সিল মেরে দিয়েছেন। (সূরা নিসা : ১৫৫)

তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজবপ্রাপ্ত জাতি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাদের ধ্বংস অনিবার্য। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক হাদিসের আলোকে বলা যায়, বর্বর নৃশংস অত্যাচারী ইহুদিরা অবশ্যই ধ্বংস হবে।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না যতক্ষণ না মুসলিমদের সঙ্গে ইহুদিদের যুদ্ধ হবে। মুসলিমরা ইহুদিদের হত্যা করতে থাকবে। তখন তারা (ইহুদিরা) পাথর ও গাছের পেছনে লুকিয়ে আশ্রয় নেবে। তখন পাথর ও গাছ বলবে, হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা, এই তো ইহুদি আমার পেছনে লুকিয়ে আছে। এসো, তাকে হত্যা করো। (সহীহ মুসলিম)।

ইহুদি জাতির প্রধান চালিকাশক্তি হলো তাদের বিকৃত ধর্মগ্রন্থ তালমুদ। এটি তাওরাতের মতো নয়, শুধু ইহুদিদের মৌখিক আইন হিসেবে পরিচিত। এতে তারা নিজেদের সুবিধামতো বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে। তালমুদ’ তার অনুসারীদের ভ্রষ্টতার সুদূর প্রান্তরে নিক্ষেপ করেছে। তাদের অন্তরে বপন করে দিয়েছে আমিত্ব ও দাম্ভিকতার আত্মঘাতী বীজ।

মহান আল্লাহর ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জঘন্য। ইহুদিরা বলে, উজাইর আল্লাহর পুত্র, আর খ্রিস্টানরা বলে, (ঈসা) মাসিহ আল্লাহর পুত্র। এ সবই তাদের মুখের (বানানো) কথা। তাদের আগে যারা আল্লাহর অবাধ্য হয়ে গিয়েছিল, তাদের মতোই এরা কথা বলছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন! এরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন দিকে যাচ্ছে? (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩০)

ইহুদি ও খ্রিস্টানরা আদিতে একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিল; কিন্তু তাদের ধর্মবিশ্বাস ও কর্মকাণ্ডের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি ও বিচ্যুতি ঢুকে পড়েছিল। এ আয়াতে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের দ্বারা একত্ববাদ কিভাবে বিকৃত হয়েছে এবং তারা কিভাবে একত্ববাদের শিক্ষা থেকে দূরে সরে পড়েছে, তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ইহুদিরা উজাইর নামের পাদ্রিকে আল্লাহর পুত্র বলে থাকে, আর খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে ঈসা (আ.) আল্লাহর পুত্র। সব খ্রিস্টান ঈসা (আ.) আল্লাহর পুত্র হওয়ার আকিদা পোষণ করলেও সব ইহুদি উজাইর আল্লাহর পুত্র হওয়ার আকিদায় বিশ্বাসী নয়। তাদের মধ্যে যারা এই আকিদায় বিশ্বাসী তাদের 'উজাইরি' বলা হয়।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top