শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২

সুদানের এল-ফাশেরে শত শত লাশ রাস্তায়, কবর দেওয়ার কেউ নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯

ছবি: সংগৃহীত

সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশের শহরে ভয়াবহ সহিংসতার পর এখন রাস্তায় পড়ে আছে শত শত লাশ। কবর দেওয়ার মতো কেউ নেই। গত সপ্তাহে শহরটি দখল করে নেয় আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। এ সময় তারা অন্তত ১,৫০০ মানুষকে হত্যা করে। শুধুমাত্র একটি হাসপাতালে নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৬০ জন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, শহরটিতে আটকে থাকা সাধারণ মানুষ এখন চরম বিপদের মধ্যে রয়েছেন। আহতরা খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছেন, আর কেউ তাঁদের সহায়তা করতে পারছে না। শহর থেকে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ পালিয়ে ৭০ কিলোমিটার দূরের তাভিলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে ইতোমধ্যে ৬ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ অবস্থান করছেন।

হায়াত নামে এক নারী বলেন, “সাতজন আরএসএফ সদস্য আমাদের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় এবং আমার ১৬ বছর বয়সি ছেলেকে আমার সামনেই হত্যা করে।” তিনি আরও জানান, “রাস্তায় অসংখ্য লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি, আহতদের কেউ উদ্ধার করতে পারেনি।”

আরেকজন বেঁচে যাওয়া হুসেইন বলেন, “এল-ফাশেরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। মৃতদেহগুলো রাস্তায় পড়ে আছে, তাদের কবর দেওয়ার কেউ নেই।”

অন্যদিকে, তাভিলা শরণার্থী শিবিরে কর্মরত নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানায়, পালিয়ে আসা মানুষের সংখ্যা এখনো অনেক কম। তাদের আশঙ্কা, যারা রওনা দিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই হয়তো পথেই মারা গেছেন।


জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, দারফুরে মানবিক সহায়তা জোরদারের জন্য সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাঁদের মধ্যে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষ রয়েছেন।”


সুদান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ শায়না লুইস বলেন, “দারফুরে এ হত্যাযজ্ঞ অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই গণহত্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু কেউ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।”

তিনি আরও জানান, মহাকাশ থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রে বিশাল এলাকায় রক্তের দাগ ও মৃতদেহের ছায়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।


সহিংসতায় জর্জরিত এল-ফাশের শহরে এখন খাদ্য, পানি ও ওষুধের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। মানবিক সংগঠনগুলো বলছে, এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।

সূত্র: আল জাজিরা



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top