পরিবার ও গোয়েন্দা সূত্রের খোঁজ
দুই বাংলাদেশি টিটিপিতে যোগ দিয়ে পাকিস্তানে নিহত
খাইবার পাখতুনখোয়া, পাকিস্তান: | প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:০৯
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন রতন ঢালী (২৯), যিনি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাসিন্দা। অপরজন ফয়সাল হোসেন (২২), যার ঠিকানা এখনও জানা যায়নি।
নিহতের বিষয়টি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (সিটিটিসি) ইউনিট নিশ্চিত করেছে। সিটিটিসির বিশেষ পুলিশ সুপার রওশন সাদিয়া আফরোজ বলেন, “আমরা শতভাগ নিশ্চিত—রতন ঢালী টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।”
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, রতন ও ফয়সাল ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর অবৈধভাবে আফগানিস্তান হয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে তারা টিটিপিতে যোগ দেন।
রতন ঢালী ঢাকার খিলগাঁওয়ের একটি মেডিকেল সেন্টারে কাজ করতেন। তার বাবা আনোয়ার ঢালী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক এবং মা সেলিনা বেগম। পরিবারের সঙ্গে শেষবার রতন যোগাযোগ করেন ২০২৪ সালের ১০ এপ্রিল রোজার ঈদে। সে তখন জানিয়েছিলেন, ভারতে আছেন এবং শিগগিরই দুবাই যাবেন।
রতনের বাবা জানান, “রতন গ্রামের বাড়ি থেকে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিল। দুবাই যাওয়ার জন্য এটি প্রয়োজন ছিল। আমরা দেখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে বলেছিল এতে তার যাত্রায় সমস্যা হবে।” রতন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং পরে মোবাইল সার্ভিসিং শিখতে শুরু করেন।
গোয়েন্দা ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানে টিটিপির সঙ্গে সংঘর্ষে ৫৪ যোদ্ধা নিহত হওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু হয়। নিহতদের মধ্যে সাভারের আহমেদ জুবায়েরও ছিলেন। তদন্তে রতন ও ফয়সালের নাম শনাক্ত হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রতন ও ফয়সালের প্রাথমিক জীবন সাধারণ ছিল, তবে শেষ কয়েক বছর ধরে তারা বিদেশে যাওয়ার কথা বলতেন। তারা টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশি যুবকদের প্ররোচনা এবং বিদেশে যোগদানের পথ প্রশস্ত করার কাজেও জড়িত ছিল।
স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে এবং পরিবারকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে। দেশের যুবকদের বিদেশে চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের গুরুত্বও পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।