মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ড

মায়ের দেহে ৩০টি, কন্যার দেহে অন্তত ৬টি ছুরিকাঘাত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৩

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ফ্ল্যাটে মা ও মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহত লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজের (১৫) দেহে নির্মমতার চিহ্ন মিলেছে। লায়লার শরীরে প্রায় ৩০টি এবং নাফিসার শরীরে অন্তত ৬টি ছুরিকাঘাত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও মর্গ কর্মকর্তারা।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দুজনের গলা ও ঘাড়ের দিকেই অধিকাংশ ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নৃশংস ও পরিকল্পিত হত্যার ইঙ্গিত দেয়।

সোমবার সকালে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ঘটনার সময় নাফিসার বাবা, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলশিক্ষক এ জেড আজিজুল ইসলাম, কর্মস্থলে ছিলেন।


মাত্র চার দিন আগে কাজে যোগ দেওয়া আয়েশা নামে এক খণ্ডকালীন গৃহকর্মীই এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন—এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইবনে মিজান বলেন,
“সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে—ঘটনার আগে ও পরে শুধুমাত্র ওই গৃহকর্মীই ফ্ল্যাটে প্রবেশ ও বাহির হয়েছেন। তাকে যথাযথভাবে শনাক্ত করার পর বিস্তারিত বিশ্লেষণ চলছে।”

সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন আয়েশা

সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে স্কুল ড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যান
নাফিসার কাজিন নুরেম মাহপারার দাবি—গৃহকর্মী আয়েশা যে স্কুল ড্রেস পরে বের হয়েছেন, সেটি ছিল নাফিসার নিজের পোশাক।

পরিবারের সদস্যরা জানান, সকাল ৭টার দিকে আজিজুল বাসা থেকে বের হন। পরীক্ষার কারণে তিনি স্বাভাবিক সময়ের আগেই বাসায় ফিরে আসেন।


দরজায় ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে চাবি দিয়ে দরজা খুললে প্রথমেই তিনি মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। রান্নাঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল লায়লার নিথর দেহ।

তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং পুলিশকে খবর দেন।

পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় পাশের দুই ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা বাইরে ছিলেন। ফলে কোনো শব্দ বা সন্দেহজনক কিছু তারা শুনতে পাননি।

ভবনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, প্রায় ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী চার দিন আগে কাজ চাইতে আসেন। পরিবার গৃহকর্মী খুঁজছিল বলে তাকে সুপারিশ করা হয়।
তিনি আরও বলেন,
“আজ সকালে স্কুল ড্রেস পরার কারণে আমি প্রথমে তাকে চিনতে পারিনি। তাকে থামালে সে বলে—দুই দিন আগে অতিথি হিসেবে এসেছিল, এখন বের হচ্ছে। এরপর রিকশায় দ্রুত চলে যায়।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top