ফিলিস্তিন শরণার্থী শিবিরে বেড়ে ওঠা মুসলিম বিজ্ঞানী ওমর ইয়াঘি রসায়নে নোবেল পুরস্কার জয়ী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৫৮

রসায়ন বিজ্ঞানে এ বছরের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ফিলিস্তিন শরণার্থী শিবিরে বেড়ে ওঠা মুসলিম বিজ্ঞানী ওমর এম. ইয়াঘি। বুধবার (৮ অক্টোবর) সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ঘোষণা করে জানায়, জাপানের সুসুমু কিতাগাওয়া ও যুক্তরাজ্যের রিচার্ড রবসন–এর সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি।
তিন বিজ্ঞানীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে ‘মেটাল–অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (Metal-Organic Frameworks) বা ধাতব জৈব কাঠামো আবিষ্কারের জন্য। এই আবিষ্কার রসায়ন জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা গ্যাস সংরক্ষণ, পরিশোধন ও জ্বালানি রূপান্তরে বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
১৯৬৫ সালে জর্ডানের আম্মানে এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারে জন্ম নেন ওমর ইয়াঘি। শৈশবে বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির অভাব, এক কক্ষের ছোট ঘরে গাদাগাদি করে থাকা—এই প্রতিকূল পরিবেশেই বেড়ে ওঠেন তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবার সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ইয়াঘি। ইংরেজিতে দুর্বল হলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমে তিনি এগিয়ে যান।
তিনি হাডসন ভ্যালি কমিউনিটি কলেজ থেকে পড়াশোনা শুরু করেন, পরে ইউনিভার্সিটি অ্যাট অ্যালবানী থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯০ সালে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন থেকে রসায়নে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তী সময়ে বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করে অসংখ্য বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেন।
নোবেল ঘোষণার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ওমর ইয়াঘি বলেন,
“আমার বাবা-মা পড়তে বা লিখতে জানতেন না। আমার জন্য এটা ছিল এক কঠিন যাত্রা। কিন্তু বিজ্ঞান আমাকে সেই যাত্রা সম্পন্ন করার সুযোগ দিয়েছে।”
ওমর ইয়াঘির এই অর্জন শুধু বৈজ্ঞানিক সাফল্য নয়, বরং মানবিক দৃঢ়তার এক অনন্য উদাহরণ। শরণার্থী শিবিরে বেড়ে ওঠা এক শিশুর বিশ্ববিজয়ী বিজ্ঞানীতে পরিণত হওয়া আজ প্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে কোটি তরুণের কাছে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।