উত্তরাঞ্চলের মহাসড়কে এক বছরে ৪৭৪ জনের প্রাণহানি

মিঠু মুরাদ | প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৮

ছবি: সংগৃহীত

উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় গত এক বছরে শুধুমাত্র মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৪৭৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৫১৭ জন। গুরুতর আহত ২৩৫ জনের মধ্যে অন্তত ২৫ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া ও রংপুর রিজিয়ন সূত্রে জানা গেছে, গত জুন থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এই এক বছরে মোট ৫৮৫টি মহাসড়ক দুর্ঘটনায় এসব ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে। বগুড়া রিজিয়নের আট জেলায় ২৭৯ জন নিহত ও ২০৭ জন আহত হয়েছেন। রংপুর রিজিয়নের আট জেলায় মারা গেছেন ১৯৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৩১০ জন।

দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে হাইওয়ে পুলিশ ওভারস্পিড, ওভারলোডিং, চালক ও পথচারীর অসচেতনতা, অদক্ষ চালক ও যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি চিহ্নিত করেছে। বিশেষ করে বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও সড়ক সংকেত অমান্য করা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে বগুড়া রিজিয়নের সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে (৭১ জন নিহত, যার মধ্যে তিনজন শিশু) এবং রংপুর রিজিয়নের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে (৫৪ জন নিহত, এক শিশু অন্তর্ভুক্ত)। চার চাকার যানবাহনের দুর্ঘটনা বেশি হয়েছে রংপুরে ২৯৪টি এবং বগুড়ায় ১৯৫টি। মোটরবাইকের দুর্ঘটনা রংপুরে ৭২টি, বগুড়ায় ৫৮টি।

উত্তরাঞ্চলের মহাসড়কগুলো এখন প্রশস্ত হওয়ায় যানবাহন চালকরা ১০০-১১০ কিমি/ঘণ্টার বেগে চলাচল করছেন। হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, থ্রি-হুইলারের ৯৬ শতাংশ চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, মোটরবাইকের ৫০ শতাংশ বেপরোয়া। বাস, ট্রাক ও থ্রি-হুইলার চালকরা সড়ক আইন মানতে অনীহা দেখাচ্ছেন।

বগুড়া রিজিয়নের পুলিশ সুপার অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. শহিদ উল্লাহ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা কমাতে পরিবহন শ্রমিক ও পথচারীদের সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া স্পিডগান ব্যবহার করে যানবাহনের গতি পর্যবেক্ষণ ও অতিরিক্ত গতির জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, “আগে ট্রাক তেমন ওভারস্পিডে চলত না। এখন বাস, মোটরবাইক ও থ্রি-হুইলারের মতোই বেপরোয়া ট্রাকচালকরাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। দ্রুতগতির বাইক চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন, ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top